ট্রাম্প: ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনায় শঙ্কিত আমেরিকা!

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনমত জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে অত্যন্ত তীব্র। বিশেষত দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে প্রচারণা চলছে জোরেশোরে, যেখানে দুই পক্ষের নীতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ বেশ চুলচেরা হচ্ছে। ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এলে আগের চেয়ে কঠোর নীতি অনুসরণ করবেন, এমনটাই স্পষ্ট করছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে, অভ্যন্তরীণ নীতিতে ট্রাম্প যে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে বর্ধিত কর হ্রাস, উচ্চ আমদানি শুল্ক আরোপ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিধিনিষেধের শিথিলকরণ। প্রথম দফায় ট্রাম্প শীর্ষ ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তিদের জন্য ব্যাপক কর হ্রাস কার্যকর করেছিলেন, যার ফলে জাতীয় ঋণ বেড়েছিল প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার। এবার চীনসহ বিভিন্ন দেশের ওপর ২০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। অথচ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ নীতির ফলে আগামী দশ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পাবে এবং ভোক্তাদের জন্য খরচ আরও বেড়ে যাবে।
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ট্রাম্পের এই ধরনের রণকৌশল, বিশেষত কড়া অভিবাসন নীতি, ট্রাম্পের রক্ষণশীল সমর্থকদের আনন্দিত করছে। ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ নামে একটি দীর্ঘ পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ফেডারেল কর্মকর্তাদের পুনর্গঠন করার লক্ষ্য রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট অনুগত নয় এমন কর্মকর্তাদের অপসারণের মাধ্যমে ‘ডিপ স্টেট’ এর অস্তিত্ব দূর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হলে, সামাজিক এবং নাগরিক অধিকারেও বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। গর্ভপাতের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কংগ্রেসের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন, এমন ধারণাও করছেন বিশ্লেষকেরা। শিক্ষা ব্যবস্থায় খ্রিষ্টধর্মকেন্দ্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হাজার হাজার বই নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা চলছে, যা আমেরিকার দক্ষিণপন্থী খ্রিষ্টবাদীদের চাপে আরও জোরালো হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গেও ট্রাম্পের নীতিতে উদারপন্থীদের দাবিকে একপ্রকার তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। তার মতে, পরিবেশ সংক্রান্ত বিধিনিষেধের পরিবর্তে ‘ড্রিল বেবি, ড্রিল’ নীতি অনুসরণ করাই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের সঠিক পথ।
কমলা হ্যারিস প্রায়ই এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন যে, ট্রাম্প একজন ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ করেন এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল আক্রমণ এর প্রমাণ। আমরা শুধু আরেকটি সপ্তাহ অপেক্ষা করছি, এটা দেখার জন্য যে, আমেরিকা সত্যিই এমন একজনকে তার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করে কিনা।
One Comment