রাষ্ট্রপতির অপসারণ ও সংবিধান বাতিলের দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি বুধবার (২৩ অক্টোবর) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ এবং ১৯৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধান বাতিলের দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে। সন্ধ্যা ৭টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়, যেখানে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা একযোগে রাজনৈতিক ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান, যেন তারা জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া দেয়।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা সবাইকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, কেননা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ১৯৭২ সালের সংবিধান দেশের চলমান সংকট নিরসনে ব্যর্থ হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, যদি কোনো রাজনৈতিক দল এই ঐক্যের আহ্বানে সাড়া না দেয়, তবে তারা ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে সেই দলকেও বয়কট করবেন।
হাসনাত আরও জানান, ১৯৭২ সালের সংবিধান বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের মূল কারণ। “বাহাত্তরের সংবিধান থাকলে দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর হবে না, বরং তা আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।” রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই না এই ধরনের আন্দোলন করতে, তবে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ আমাদের অন্যতম প্রধান দাবি।”
তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তার নেতারা সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত। আপনারা আমাদের ওপর আস্থা রাখুন, আমরা জাতির নেতৃত্ব দিয়ে এই সংকট মোকাবিলা করব।”
সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আব্দুল্লাহ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে এবং এর ভিত্তিতেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান এবং বলেন, “ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দমননীতির জন্য দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।”
এই সংবাদ সম্মেলন এবং এর মাধ্যমে ঘোষিত জাতীয় ঐক্যের আহ্বান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে।