প্রথমবারের মত বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের বাস রপ্তানি

বাংলাদেশের অটোমোবাইল খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে ইফাদ অটোস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো বাস রপ্তানির উদ্যোগ নিয়ে ইতিহাস গড়েছে। চলতি সপ্তাহে এই রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা দেশের জন্য একটি গর্বের বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইফাদ অটোসের প্রাথমিক চালানে মোট ১১টি এসি বাস প্রতিবেশী দেশ ভুটানে পাঠানো হয়েছে।
এই এসি বাসগুলো ইফাদ অটোস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির নিজস্ব ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানায় তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্যোগে আনন্দিত ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু বলেন, “এটি শুধু আমাদের কোম্পানির জন্য নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্যই একটি গৌরবের মুহূর্ত। আমাদের দেশ এতদিন শুধু বাস আমদানিই করত। কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো বাস রপ্তানি হচ্ছে, যা ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে।”
ইফতেখার আহমেদ টিপু আরও জানান, এ রপ্তানি বাংলাদেশের অটোমোবাইল শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক। ভবিষ্যতে সরকারের সহযোগিতায় আরও অনেক দেশে বাস রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে মালদ্বীপ, নেপাল, মায়ানমার, এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোও বাংলাদেশের এই এসি ও নন-এসি বাসে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে, তার ফলে স্থানীয় চাহিদাও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এই চাহিদা মেটাতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানি করতে হয়েছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে ইফাদ অটোস লিমিটেড বাংলাদেশেই গাড়ি ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিকভাবে এই কারখানাটি শুধু গাড়ি সংযোজনের কাজ করলেও, বর্তমানে বিশ্বমানের এসি ও নন-এসি লাক্সারি বাস উৎপাদন করছে।
ইফাদ অটোস পিএলসি, যা ইফাদ গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, ১৯৮৫ সাল থেকে অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের এসি, নন-এসি বাস, ট্রাক, এবং কাভার্ড ভ্যান বাংলাদেশে বাজারজাত করছে। ২০১৭ সালে ইফাদ অটোস ঢাকার ধামরাইতে অশোক লেল্যান্ডের কারিগরি সহযোগিতায় গাড়ি ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম শুরু করে। বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাটি দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক গাড়ি উৎপাদন কারখানা হিসেবে পরিচিত।
ইফাদ অটোসের এই রপ্তানি উদ্যোগ দেশের অটোমোবাইল শিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। স্থানীয়ভাবে গাড়ি উৎপাদন এবং রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে বাংলাদেশ, যা দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।