বাংলাদেশ

১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক একটি চুক্তি বাতিলের দায়ে মামলা করে অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নরের বিরুদ্ধে পরোয়ানার নেপথ্যে

যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশন এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ২৫ বছরের পুরোনো একটি মামলায় সাম্প্রতিক ঘটনায় বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও তা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্টে ১৯৯৯ সালে দায়ের করা মামলাটিতে স্মিথ কোজেনারেশন কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল।

মামলার পেছনে রয়েছে ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে স্মিথ কোজেনারেশনের করা একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিলের ঘটনা। চুক্তির আওতায় দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য স্মিথ কোজেনারেশনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তীতে বাতিল করে সরকার। এই চুক্তি বাতিলের জন্য স্মিথ কোজেনারেশন ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে।

সম্প্রতি, এই মামলার বিচার শেষে ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্ট থেকে একটি রায় প্রদান করা হয়। এই রায়ের আওতায় সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পরোয়ানাটি স্থগিত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদ্য নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এ তথ্য জানান।

মুশফিকুল ফজল আনসারী উল্লেখ করেন, “১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই চুক্তি বাতিলের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা হয়। তবে প্রায় ২৫ বছর পর আদালতের রায় এখনকার সরকার বা তাদের নীতির ওপর দায়ভার চাপানো ঠিক হবে না। এই অন্তর্বর্তী সরকার বা দেশের জনগণ এ রায় মেনে নিতে পারে না।”

এদিকে, নিউইয়র্ক ভিত্তিক আইনি সংবাদমাধ্যম ল-৩৬০ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জারি করা এ আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে দায়ের হওয়া মামলায় এই দুই শীর্ষ অর্থনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের জন্য বেঞ্চ ওয়ারেন্ট জারি করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ মামলাটি বাংলাদেশের পুরনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও অর্থনৈতিক চুক্তির দায় তুলে ধরে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি পুনঃমূল্যায়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারিক ব্যবস্থার আওতায় কূটনৈতিক ও আইনি পথ বেছে নিতে আগ্রহী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button