রাজনীতি

জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হবে ২৪-এর গণবিপ্লব: ডঃ শফিকুর রহমান

জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হবে ২৪–এর গণবিপ্লব। এই গণবিপ্লবের চেতনা আমাদের দল এবং অন্যান্য সকল দলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে। আমাদের উচিত এই চেতনার সাথে কোনোভাবেই পাস কাটানো নয়, এবং যেন কেউ ভিন্ন পথে হাঁটার চিন্তা না করে। যারা এই পথ বেছে নেবে, তাদের অবশ্যই স্বৈরাচারের রাস্তায় পা রাখতে হবে। বর্তমান প্রজন্ম আর এই সকল ব্যর্থতা দেখার প্রস্তুতি নেয়নি, তারা পরিবর্তন চায়।

আজ শুক্রবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর নগপাড়া এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে গাজীপুর জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত দলের রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, “আমি আমার দলকে সতর্ক করছি এবং সব রাজনৈতিক দলকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের চেতনার বিপক্ষে যেন আমরা কেউ দাঁড়াই না। আমাদের জনগণের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে। যদি জনগণের ন্যায্য দাবি থাকে, তাহলে সেই দাবিকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করা কিংবা দুঃসাহস দেখানো উচিত নয়। তবে, যদি জনগণের মধ্যে থেকে কোনো বিশেষ মহল জাতিকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য কিছু নিয়ে আসে, তাহলে আমাদের লক্ষ্য থাকবে তাদের প্রতিহত করা।”

অনুষ্ঠানে শফিকুর রহমান আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তারা আমাদের হৃদয়ের অন্তরঙ্গ অংশ। তাদের দাবি ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ অর্থাৎ আমরা সুবিচার চাই। সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজে ডাকাত এবং চোরের কোনো স্থান থাকবে না। যেখানে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, সেখানে সম্পদ লুণ্ঠন এবং পাচারের সুযোগ থাকবে না। সেখানে ঘুষের ব্যবসাও চলবে না।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমরা এমন একটি সংসদ ও সরকার পেয়েছিলাম, যা জনগণের স্বার্থে ছিল না। সেখানে ব্যক্তিবন্দনায় নেচে-গেয়ে জনগণের টাকা অপব্যয় করা হতো। এক ব্যক্তির ইশারায় সবকিছু উঠত এবং বসত। ইতিহাসে যেসব দুর্ধর্ষ স্বৈরশাসক ছিল, তারা নিজেদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ রব হিসেবে পরিচয় করাত।”

জাতীয় সংকটে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা বলেছি, দল এবং ধর্ম যার যার, দেশ আমাদের সবার। দেশের মৌলিক স্বার্থে দলগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের বিভাজন এই জাতি কামনা করে না। সংকট এসেছে, সংকট আছে, সংকট থাকবে। আমরা সবাই মিলে এই জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবো।”

তিনি বলেন, “একজন নাগরিক যেই পর্যায়ের হোক, যে দলের বা ধর্মের হোক, সে আদালতে গেলে ন্যায়বিচার পাবে। সেখানে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হবে না। কারো টেলিফোনের কারণে নাগরিকের জীবনে অত্যাচারের স্টিমরোলার আসবে না। মানুষকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে না। বিচারপ্রার্থী যদি ন্যায়বিচার পায়, তাহলে সে সেই দুয়ারে ঘুরবে না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে চাই যেখানে মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই কল্যাণ রাষ্ট্রের অভিযাত্রী হিসেবে আমরা দেশবাসীর সহযোগিতা ও দোয়া চাই।”

জেলা জামায়াতের আমির জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ওই রোকন সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সফি উদ্দিন, জেলা নায়েবে আমির আবদুল হাকিম, মাওলানা সেফাউল হক, জেলা সহকারী সেক্রেটারি আনিসুর রহমান বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান এবং মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button