সর্বোচ্চ তিন বার বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া যাবে

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। আজ বৃহস্পতিবার, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদিত হয়েছে, যা ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নব নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪’ নামে পরিচিত। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এই নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় প্রার্থীরা নির্দিষ্ট একটি বয়সসীমার মধ্যে তিনবার পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
এটি বিসিএস প্রার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, যা তাদের ক্যারিয়ারের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ায় আরও কার্যকরভাবে যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের তরুণ সমাজের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকের মতে, এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক, কারণ এটি চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একটি ন্যায্য এবং সমতা ভিত্তিক সুযোগ সৃষ্টি করবে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বয়সসীমা আরও বাড়ানো উচিত ছিল, কারণ অনেকেই ব্যক্তিগত এবং শিক্ষাগত কারণে তাদের প্রথম চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেরি করেন।
তবে বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে তিনবারের সীমাবদ্ধতা আরোপ করায় প্রার্থীরা পরীক্ষার প্রতি আরও মনোযোগী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আগের নিয়মে প্রার্থীরা একাধিকবার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতেন, যা অনেক সময় পরীক্ষার মান এবং প্রতিযোগিতার তীব্রতা কমিয়ে দিত। এখন এই সীমাবদ্ধতা প্রার্থীদের মধ্যে গুণগত মানের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এছাড়া, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে চাকরির জন্য প্রস্তুতির ব্যাপারে সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে।
বৈঠকে আলোচনা হয় যে, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর ফলে চাকরিপ্রার্থীরা নির্দিষ্ট একটি বয়সের মধ্যে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে পারবে।
সব মিলিয়ে, বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতা এবং চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নিয়ে গৃহীত এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের শিক্ষা ও চাকরি খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।