প্রযুক্তি

মহাকাশে হাঁটার অনুভূতি কেমন বাস্তব অভিজ্ঞতা জানালেন

মার্কিন ব্যবসায়ী ও ইলেকট্রনিক পেমেন্ট প্রতিষ্ঠান শিফট ৪-এর প্রতিষ্ঠাতা জ্যারেড আইজ্যাকম্যান সম্প্রতি এক বিরল এবং রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন—মহাকাশে হাঁটা বা স্পেসওয়াক। মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রশিক্ষিত এবং সরকারি মহাকাশ সংস্থার মহাকাশচারীরাই স্পেসওয়াক করার সুযোগ পান। তবে স্পেসএক্সের ‘পোলারিস ডন’ মিশনে অংশ নিয়ে অপেশাদার মহাকাশচারী হিসেবে এই অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন জ্যারেড, যা ব্যক্তিগত মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। গত সেপ্টেম্বরে সম্পন্ন হওয়া পাঁচ দিনের এই মিশনে আইজ্যাকম্যানসহ তার তিন সহকর্মী মহাকাশে ভ্রমণ শেষে সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।

মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে জ্যারেড আইজ্যাকম্যান বলেন, “মহাকাশের অন্ধকার দিকটি যখন আপনি পাশের দিকে তাকিয়ে দেখবেন, তখন তা একেবারেই অন্যরকম অনুভূতি দেয়। পৃথিবী থেকে আলোকবর্ষ দূরে থাকা এই গভীর মহাকাশের অন্ধকারে বিপদের আশঙ্কা থাকলেও সেই অনুভূতিকে ভয় বা প্রতিবন্ধকতার মতো কিছু হিসেবে ভাবা উচিত নয়।” মহাকাশে হাঁটা বা স্পেসওয়াকের অভিজ্ঞতাকে তিনি আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করা সাহসী অভিযাত্রীদের যাত্রার সঙ্গেও তুলনা করেছেন, যা উনিশ শতকে যেমন ছিল রোমাঞ্চকর তেমনি ছিল বিপজ্জনক। মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রেও এই চ্যালেঞ্জের দিকটি রয়েছে বলে তিনি জানান। মহাকাশের কঠিন পরিবেশ এবং শূন্য গ্রাভিটির কারণে এই অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে ছিল চ্যালেঞ্জিং এবং একইসঙ্গে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত।

স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের পরিচালিত এই ‘পোলারিস ডন’ মিশনটি মহাকাশে বেসরকারি উদ্যোগে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক মাইলফলক। এ মিশনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো একদল অপেশাদার মহাকাশচারী স্পেসওয়াক সম্পন্ন করেছেন, যা মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে একটি অনন্য উদাহরণ। উল্লেখ্য, এই মিশনের আরেক অপেশাদার মহাকাশচারী ও স্পেসএক্সের প্রকৌশলী সারাহ গিলিসও জ্যারেডের সঙ্গে স্পেসওয়াকে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের এই সাহসী পদক্ষেপ ভবিষ্যতে ব্যক্তিগত মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে এবং মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরও নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন মহাকাশ গবেষণা বিশেষজ্ঞরা।

মহাকাশে ভ্রমণের এই চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা নিয়ে জ্যারেড বলেন, “পৃথিবী থেকে মহাকাশের দিকে তাকানো যেমন অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা, তেমনি সেখানে নিজে অবস্থান করে চারপাশের শূন্যতা উপলব্ধি করাও বিশেষ এক অনুভূতি। মহাকাশের পরিবেশ যেমন শান্তিপূর্ণ নয়, তেমনি অত্যন্ত বিপদসংকুল এবং প্রতিকূলও।” জ্যারেডের এই অভিজ্ঞতা ব্যক্তিগত মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেছে, যেখানে বিশেষ প্রশিক্ষণ ব্যতিরেকেও অপেশাদার মহাকাশচারীরা মহাকাশ ভ্রমণ করতে পারছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button